জমির মালিকানা যাচাই করার পদ্ধতি | A Comprehensive Case Study on in Bangladesh

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে জমির মালিকানা যাচাই করার পদ্ধতি নিয়ে। বাংলাদেশে জমির মালিকানা যাচাই করার পদ্ধতি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা কোনো রিয়েল এস্টেট লেনদেনে জড়িত সকলের জন্য অপরিহার্য। জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং জালিয়াতির ঘটনাগুলির কথা মাথায় রেখে, জমির মালিকানা যাচাইয়ের পদ্ধতিগুলি বোঝা ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের জন্য সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

জমির মালিকানা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা

জমির মালিকানা যাচাই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যা নিশ্চিত করে যে একটি জমির ওপর ব্যক্তিদের বা প্রতিষ্ঠানের আইনগত অধিকার রয়েছে। এই যাচাই ছাড়া, ক্রেতাদের জমির বিরুদ্ধে বিরোধ বা অমীমাংসিত দাবির ঝুঁকিতে থাকতে হয়। মালিকানা যাচাই না করার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে, যা প্রায়ই অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং আইনগত দ্বন্দ্বের দিকে নিয়ে যায়।

কোনো জমির বৈধ দখল সম্পর্কে জানতে হলে উক্ত জমির মালিকানা যাচাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য উক্ত মালিক এর নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করতে হবে। এর ফলে জানা যাবে জমির আসল মালিক কে, জমির খতিয়ান নাম্বার কত ,জমির দাগ নাম্বার কত ।  আরও জানা যাবে খতিয়ানে কতটুকু অংশ তার নামে বৈধ আছে। আরও জানা যাবে জমির পরিমাণ এবং জমির স্থান সম্পর্কে। 

বিক্রেতার থেকে জমি ক্রয়ের পূর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উক্ত ব্যাক্তির নামে জমির মালিকানা আছে কিনা সেটা যাচাই করা। জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আমরা অনুসরণ করতে পারি, যেমন – প্রথমে জমির মূল দলিল তল্লাশি করা, তারপর জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করতে হবে। উক্ত কাজ গুলো দুই ভাবে করা যায়। যথা:

জমির খতিয়ান অনুসন্ধান

  • অনলাইনের মাধ্যমে 
  • সরাসরি উক্ত জমির স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে 

 সাধারণত  ভূমি অফিস গুলোতেই উক্ত এলাকার আওতাধীন সমস্ত জমির দলিল এবং তথ্য সংরক্ষিত করা থাকে।

বাংলাদেশের সরকার ভূমি মন্রণালয় ভূমির সকল সেবা অনলাইন অর্থ্যাৎ ডিজিটালাইজড করেছে। যার কারণে জমির খতিয়ান বের করা এবং জমির মালিকানা যাচাই করা অনেক টাই সহজ হয়ে গেছে এখন।

তাই এখন খুব সহজেই বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা যাচাই করা যায়। প্রাথমিক ভাবে অনলাইনে নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করা যাবে। কাঙ্খিত ব্যাক্তির কাছে থাকা পর্চা গুলো অনলাইনের মাধ্যমে যাচাই করে দেখতে হবে। অনলাইনে মালিকানা যাচাই করার জন্য জমির মৌজা এবং জমির ঠিকানা জানা লাগবে।

ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে ই জমির মালিকানা যাচাই করা যায়। মোবাইলের মাধ্যমে জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য google play store থেকে ekhatian মোবাইল এপ্লিকেশন  টি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর নিচের দেখানো নিয়মে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে হবে। তবে জমির মালিকানা বের করার আগে যে সব বিষয় গুলো দরকার সেগুলো আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। 

Source:Youtube

মালিকানা বের করতে যা প্রয়োজন

সরাসরি ভূমি অফিস  বা অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করার জন্য যেই বিষয় গুলো জানা প্রয়োজন তা হলো—

  • জমি যেই জেলাতে অবস্থিত। (জেলার নাম)
  • থানা বা উপজেলার নাম।
  • জমিটি কোন মৌজাই আছে তা জানা। মৌজার নাম।
  • দাগ নাম্বার।
  • খতিয়ান নাম্বার।
  • কম্পিউটার বা মোবাইল। 

eporcha gov.bd ওয়েবসাইটের সার্ভে খতিয়ান অপশন থেকে জমির ঠিকানা ও মৌজা উল্লেখ করে “অধিকতর অনুসন্ধানে” ক্লিক করতে হবে। তারপর “মালিকের নাম” খালি বক্সে কাঙ্খিত ব্যক্তির নামের সম্পূর্ণ অংশ লিখে “খুজুন” বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

জমির মালিকানা নাম দিয়ে যাচাই করার পদ্ধতি

  • প্রথমে eporcha. gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে 
  • তারপর সার্ভে খতিয়ান অপশন এ যেতে হবে
  • এরপর পর্যায় ক্রমে বিভাগ, জেলা,উপজেলা এবং মৌজা নং সিলেক্ট করতে হবে।
  • তারপর ডান পাশের নিচে লেখা “অধিকতর অনুসন্ধান” – এ ক্লিক করতে হবে।
  • তারপর মালিকের নাম এবং দাগ নম্বর এই দুইটি অপশন দেখা যাবে। মালিকের নাম অপশনে কাঙ্খিত ব্যাক্তির নাম উল্লেখ করতে হবে।
  • এর পর খুজুন বাটনে ক্লিক করলে উক্ত ব্যাক্তির নামে জমির মালিকানা রয়েছে কিনা তা জানা যাবে।

সব তথ্য ঠিক থাকা সত্বেও যদি নামের সাথে কোনো জমির তথ্য খুজে না পাওয়া যায়। তাহলে দাগ নাম্বার দিয়ে খুঁজে দেখতে হবে যে উক্ত নামের সাথে কোনো জমির তথ্য পাওয়া যায় কিনা। সেই জন্য জমির সঠিক দাগ নাম্বার জানা প্রয়োজন।

জমির মালিকের নাম,জমির মৌজা নং এবং জমির দাগ নাম্বার টি জানা থাকলে অনলাইন ছাড়াও অফলাইনে ভূমি অফিসে গিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করা যায়। 

বাংলাদেশে জমির মালিকানা চেক অনলাইনে :

ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ডস ( ই-পোর্চা) সিস্টেমটি ২০২০ সালে একটু একক প্ল্যাটফর্ম থেকে পরিষেবা প্রদানের জন্য চালু করা হয়েছিল। এই প্ল্যাটফর্ম টি ব্যবহার করে নাগরিকরা সহজে ই তাদের নিজস্ব জমির ভূমি রেকর্ড, মানচিত্র সম্পর্কিত তথ্য  এবং মানচিত্র অনলাইনে অনুসন্ধান করতে পারে।

অনলাইনে খতিয়ান বের করার নিয়ম : 

  • eporcha. gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। 
  • খতিয়ান অপশন টি নির্বাচন করতে হবে।
  • খতিয়ান অনুসন্ধান
  • খতিয়ান আবেদন
  • খতিয়ান ডাউনলোড

Know More:

FAQ

বাংলাদেশে জমির মালিকানা যাচাইয়ের জন্য কী কী নথির প্রয়োজন?

প্রয়োজনীয় নথিগুলির মধ্যে জমির দলিল, মিউটেশন সার্টিফিকেট এবং স্থানীয় ভূমি রেজিস্ট্রির রেকর্ড অন্তর্ভুক্ত।

জমির যাচাই প্রক্রিয়া সাধারণত কত সময় নেয়?

সমস্যার জটিলতা অনুযায়ী সময়সীমা ভিন্ন হতে পারে, তবে এটি সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় নিতে পারে।

আমি কি অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাই করতে পারি?

হ্যাঁ, কিছু স্থানীয় ভূমি অফিস অনলাইনে জমির মালিকানা যাচাইয়ের সেবা প্রদান করে। তবে, সম্পূর্ণ যাচাইয়ের জন্য অফিসে পরিদর্শন করা প্রয়োজন হতে পারে।

যদি আমি জমির রেকর্ডে অসঙ্গতি খুঁজে পাই, তাহলে কী করতে হবে?

যথাসম্ভব দ্রুত আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করুন যাতে অসঙ্গতিগুলি সমাধান করা যায় এবং আপনার অধিকারগুলি রক্ষা করা যায়।

ভবিষ্যতে জমির বিরোধ থেকে কীভাবে রক্ষা পাব?

জমি কেনার আগে সম্পূর্ণ যাচাইকরণ করুন এবং আপনার জমির সাথে সম্পর্কিত সমস্ত নথি সংরক্ষণ করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *