দানপত্র রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম | Registration of Deed of Gift

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে দানপত্র রেজিস্ট্রেশন নিয়ে। দানপত্র রেজিস্ট্রেশন হলো সম্পত্তি হস্তান্তরের একটি আইনগত প্রক্রিয়া, যেখানে একজন ব্যক্তি (দানকারী) তার সম্পত্তি বিনামূল্যে আরেকজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের (গ্রহীতা) কাছে হস্তান্তর করেন। এটি বাংলাদেশের সাধারণ রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮ (Registration Act, 1908) এর অধীনে পরিচালিত হয়।

যা যা থাকছে

দান পত্র রেজিস্ট্রেশন কী ?

দান পত্র রেজিস্ট্রেশন হলো এমন একটি আইনগত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার জমি বা সম্পত্তি বিনামূল্যে অন্য কাউকে দান করেন এবং এটি সরকারিভাবে নিবন্ধিত হয়। এটি সম্পত্তি মালিকানা হস্তান্তরের একটি সুরক্ষিত এবং আইনসম্মত পদ্ধতি।

কেন দান পত্র রেজিস্ট্রেশন গুরুত্বপূর্ণ?

দান পত্র রেজিস্ট্রেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, বিশেষ করে সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে। এটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ যথাঃ

১. আইনগত বৈধতা: দান পত্র রেজিস্ট্রেশন সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য আইনি স্বীকৃতি প্রদান করে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া, দান পত্র আইনত স্বীকৃত নয় এবং কোনো পক্ষ তাতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

২. মালিকানার সুরক্ষা: যদি দান পত্র রেজিস্টার্ড হয়, তবে সম্পত্তির নতুন মালিকের মালিকানা স্বীকৃত হয়। এটি ভবিষ্যতে কোনো বিরোধ বা জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে।

৩. প্রমাণ হিসেবে কার্যকর: রেজিস্টার্ড দান পত্র একটি বৈধ নথি যা আদালত বা অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।

৪. জালিয়াতি প্রতিরোধ: রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে সম্পত্তি হস্তান্তর সঠিকভাবে হয়েছে এবং এতে কোনো প্রতারণা বা জালিয়াতি নেই।

৫. ভবিষ্যত সুরক্ষা: রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দান প্রক্রিয়া একটি স্থায়ী নথি হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। এটি ভবিষ্যতে পরিবারের মধ্যে বা তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়।

৬. সম্পত্তি কর ও অন্যান্য আইনি দায়বদ্ধতা: রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় সম্পত্তির বর্তমান মূল্যায়ন হয়, যা কর ও অন্যান্য আইনি দায়বদ্ধতা নির্ধারণে সাহায্য করে।

৭. স্থানীয় আইনের প্রয়োজনীয়তা: বাংলাদেশের মতো দেশে সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য দান পত্র রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, নির্দিষ্ট ধরণের দলিল রেজিস্টার্ড না হলে তা কার্যকর হয় না।

সুতরাং, দান পত্র রেজিস্ট্রেশন সম্পত্তি হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠ, নির্ভরযোগ্য এবং আইনসম্মত করার জন্য অপরিহার্য।ট

মৃণাল কান্তি এবং তার পৈতৃক সম্পত্তি বাস্তব উদাহরণ

মৃণাল কান্তি একটি গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করেন। তার দুটি ছেলে শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন । এবং তিনি তার নিজ গ্রামে তার জমি স্থানীয় একটি স্কুলের নামে দান করতে চান। কিন্তু জমি দান করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার তেমন কোনো জ্ঞান ছিল না।

চ্যালেঞ্জ:

  1. প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতা: দান পত্র কীভাবে তৈরি করতে হয়, তার কোনো ধারণা ছিল না।
  2. আইনগত জটিলতা: জমির মালিকানা দলিলের কিছু ত্রুটি ছিল।
  3. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ: জমি সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করতে সময় লেগেছে।

২ লক্ষ ১০ হাজার প্লাস প্রিমিয়াম কপিরাইট ফ্রি রিল বান্ডেল

Original price was: 399.00৳ .Current price is: 99.00৳ .

ভিডিওগুলোতে কপিরাইট আসবে কি? নিশ্চিত থাকুন, govinfobd.com-এর ভিডিওগুলো কপিরাইট সমস্যামুক্ত! আমাদের তৈরি করা প্রতিটি ভিডিও ১০০% নিজস্ব প্রোডাকশন এবং এগুলোর কপিরাইট মালিকানা পুরোপুরি govinfobd.com-এর। ফলে, আপনি নিশ্চিন্তে এই ভিডিওগুলো ব্যবহার করতে পারবেন কোনো ধরনের কপিরাইট ইস্যুর ভয় ছাড়াই। কেন কপিরাইট আসবে না? ✅ পুরোপুরি আমাদের নিজস্ব প্রোডাকশন: govinfobd.com-এর টিম প্রতিটি ভিডিও নিজস্বভাবে তৈরি করে। এখানে…

সমাধান:

  1. মৃণাল কান্তি স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহায়তা নেন।
  2. তিনি একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন, যিনি জমির দলিলের ত্রুটি সংশোধন করেন।
  3. প্রয়োজনীয় নথিপত্র (যেমন- খতিয়ান, জমির ম্যাপ) প্রস্তুত করে দান পত্র তৈরি করেন।
  4. নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন।

ফলাফল:

স্থানীয় স্কুলটি জমির মালিকানা পায় এবং সেখানে একটি পাঠাগার স্থাপন করা হয়। যা গ্রামের ছাত্রদের মধ্যে জ্ঞানার্জনের সুযোগ বাড়িয়েছে।

দান পত্র রেজিস্ট্রেশনের ধাপসমূহ

১. দানপত্র দলিল প্রস্তুত করা:

  • প্রথমে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী বা দলিল লেখকের মাধ্যমে দানপত্রের খসড়া তৈরি করতে হবে।
  • দলিলে দাতা ও গ্রহীতার নাম, ঠিকানা, সম্পত্তির বিবরণ এবং শর্তাবলী সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

২. স্ট্যাম্প শুল্ক প্রদান:

  • নির্ধারিত স্ট্যাম্প শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
  • দানপত্রের মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে স্ট্যাম্প ডিউটি নির্ধারিত হয়।

৩. দলিলে স্বাক্ষর:

  • দলিলে দাতা, গ্রহীতা এবং দুইজন নির্ভরযোগ্য স্বাক্ষীর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
  • এটি নিশ্চিত করে যে দলিলটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাক্ষরিত।

৪. রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান:

  • দলিল জমা দেওয়ার আগে রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হার অনুযায়ী প্রদান করতে হয়।

৫. দলিল জমা দেওয়া:

  • দানপত্র দলিল সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দিন।
  • দাতা ও গ্রহীতা নিজ নিজ পরিচয়পত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট) সঙ্গে আনবেন।

৬. রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন:

  • দলিল যাচাইয়ের পর, সাব-রেজিস্ট্রার দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন।
  • রেজিস্ট্রেশনের পরে, একটি নিবন্ধিত কপি প্রদান করা হয়।

৭. মূল দলিল গ্রহণ:

  • রেজিস্ট্রেশনের নির্দিষ্ট সময় পরে (সাধারণত ১৫-৩০ দিন), মূল দলিল সংগ্রহ করতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র:

  • দানকৃত সম্পত্তির দলিল।
  • দাতা ও গ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির খতিয়ান ও পর্চা।
  • স্ট্যাম্প শুল্ক ও রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদানের রসিদ।

৮. দানপত্র দলিল তৈরি:

  • একজন পেশাদার দলিল লেখকের সাহায্যে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে দানপত্রের খসড়া প্রস্তুত করুন।
  • দলিলে নিম্নলিখিত তথ্য থাকতে হবে:
    • দাতা ও গ্রহীতার নাম, পিতার নাম, ঠিকানা।
    • দানকৃত সম্পত্তির সুনির্দিষ্ট বিবরণ (পর্চা নম্বর, খতিয়ান নম্বর, জমির পরিমাণ)।
    • দানপত্রের শর্তাবলী (যদি থাকে)।
    • দলিলের তারিখ।

৯. সম্পত্তির মূল্যায়ন:

  • দানকৃত সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য নির্ধারণ করুন।
  • সরকারি রেট অনুযায়ী মূল্যায়ন সঠিকভাবে করতে হবে, কারণ এটি স্ট্যাম্প ডিউটি নির্ধারণে সহায়ক হবে।

৪. স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান:

  • নির্ধারিত স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • স্ট্যাম্প ডিউটি সম্পত্তির বাজারমূল্যের উপর নির্ভর করে।
  • স্ট্যাম্প ও রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদান শেষে রসিদ সংগ্রহ করুন।

৫. দানপত্রে স্বাক্ষর:

  • দলিল তৈরি শেষে দাতা, গ্রহীতা এবং দুইজন সাক্ষীর স্বাক্ষর করতে হবে।
  • এটি নিশ্চিত করতে হবে যে দলিলটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং কোনো প্রকার চাপ বা প্রভাব নেই।

৬. দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন:

  • দলিল নিয়ে স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যান।
  • সেখানে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
    • দাতা ও গ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্র।
    • সম্পত্তির খতিয়ান ও পর্চা।
    • স্ট্যাম্প শুল্ক ও রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের রসিদ।
    • বিদ্যমান দলিল (যদি থাকে)।

৭. দলিল যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন:

  • রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দেওয়ার পরে অফিস কর্তৃপক্ষ দলিল যাচাই করবে।
  • দলিল যাচাই শেষে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর ও সিলমোহর দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন।

৮. রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান:

  • দলিল রেজিস্ট্রেশনের পরে একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করা হবে।
  • এটি দলিলের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

৯. মূল দলিল সংগ্রহ:

  • রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, সাধারণত ১৫-৩০ দিনের মধ্যে মূল দলিল সংগ্রহ করতে হয়।
  • দলিল সংগ্রহের সময় রেজিস্ট্রেশন রসিদ সঙ্গে আনুন।

১০. দানপত্র হস্তান্তর:

  • রেজিস্ট্রেশন শেষে দানপত্রের মাধ্যমে সম্পত্তি গ্রহীতার কাছে হস্তান্তরিত হয়।
  • দানপত্রের ভিত্তিতে জমি নামজারি (Mutation) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • দানপত্র রেজিস্ট্রেশন আইনি বাধ্যতামূলক। এটি ভবিষ্যতে কোনো ধরনের জটিলতা এড়াতে সহায়ক।
  • দানকৃত সম্পত্তি হস্তান্তরের পরে দাতা আর সেটি ফেরত চাইতে পারবেন না।
  • সম্পত্তির হস্তান্তরের আগে দাতা নিশ্চিত করবেন যে সেটি সম্পূর্ণরূপে তার নিজের।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি একটি সঠিক এবং বৈধ দানপত্র রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। অতিরিক্ত পরামর্শের জন্য নিকটস্থ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস বা অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাহায্য নিন।

দান পত্র রেজিস্ট্রেশনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

দান পত্র রেজিস্ট্রেশনের জন্য বেশ কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, যা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। নিচে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলো:

১. দান পত্রের খসড়া: দাতা (দানকারী) ও গ্রহীতা (যে দান গ্রহণ করবে) উভয়ের তথ্য সম্বলিত দান পত্রের লিখিত খসড়া।

২. দাতার পরিচয়পত্র

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা পাসপোর্ট।
  • দাতার একটি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

৩. গ্রহীতার পরিচয়পত্র

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা পাসপোর্ট।
  • গ্রহীতার একটি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

৪. জমির কাগজপত্র

  • জমির মূল দলিল (Title Deed)।
  • নামজারি সার্টিফিকেট এবং খতিয়ান (Mutation Certificate & Khatian)।
  • জমির সর্বশেষ পরিশোধিত খাজনার রসিদ।
  • জমির মানচিত্র (Land Map)।

৫. নির্ধারিত ফি ও করের রসিদ

  • রেজিস্ট্রেশন ফি।
  • স্ট্যাম্প শুল্ক (Stamp Duty)।
  • সম্পত্তি হস্তান্তর কর (যদি প্রযোজ্য হয়)।

৬. উত্তরাধিকার প্রমাণপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়): দাতা যদি উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি পেয়ে থাকেন, তবে তার জন্য উত্তরাধিকার সনদ প্রয়োজন।

৭. অনুমোদন পত্র : যদি জমি সরকারি সংস্থা বা পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়, তবে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পত্র।

৮. স্বাক্ষীদের তথ্য

  • সাধারণত দুইজন স্বাক্ষীর উপস্থিতি প্রয়োজন।
  • তাদের পরিচয়পত্র ও ছবি।

৯. নির্ধারিত ফর্ম: সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে নির্ধারিত ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।

দানপত্র রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে অতিরিক্ত তথ্য

  • যদি দাতা মারা যান: যদি দাতা রেজিস্ট্রেশনের আগে মারা যান, তাহলে দান পত্রের বৈধতা থাকে না। তাই প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা উচিত।
  • জমির মালিকানা পরিবর্তন: রেজিস্ট্রেশনের পরে ভূমি অফিসে জমির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করুন। এটি সম্পন্ন না হলে প্রাপকের নামে জমি রেকর্ড হবে না।
  • নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা: ১ বিঘার বেশি জমি দান করলে এটি অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
  • দাতার সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় দান: দান পত্র রেজিস্ট্রেশন তখনই বৈধ হয় যখন দাতা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এটি করেন। কোনো জোরজবরদস্তি থাকলে দান পত্র বাতিলযোগ্য।

প্রয়োজনীয় পরামর্শ

দান পত্র রেজিস্ট্রেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং আইনি প্রক্রিয়া। এটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত। নিচে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হলো:

১. দাতা ও গ্রহীতার প্রস্তুতি

  • দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের পরিচয়পত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র সঠিক এবং বৈধ হওয়া নিশ্চিত করুন।
  • দাতা স্বেচ্ছায় এবং কোনো প্রভাব ছাড়া সম্পত্তি দান করছেন, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

২. সম্পত্তির বৈধতা যাচাই

  • দান করার আগে নিশ্চিত করুন যে দাতা সম্পত্তির প্রকৃত মালিক।
  • জমি বা সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ বা আইনি জটিলতা রয়েছে কি না, তা যাচাই করুন।

৩. দলিলের খসড়া প্রস্তুত

  • একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে দান পত্রের খসড়া প্রস্তুত করুন।
  • দলিলের ভাষা স্পষ্ট এবং ভুল-বোঝাবুঝি মুক্ত হতে হবে।

৪. স্বাক্ষীদের নির্বাচন

  • দান পত্র রেজিস্ট্রেশনে সাধারণত দুইজন স্বাক্ষী প্রয়োজন।
  • স্বাক্ষীরা হতে হবে নিরপেক্ষ এবং পরিচয়পত্রসহ প্রমাণিত।

৫. রেজিস্ট্রেশন ফি এবং শুল্ক পরিশোধ

  • রেজিস্ট্রেশন ফি, স্ট্যাম্প শুল্ক, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফি সময়মতো পরিশোধ করুন।
  • স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

৬. সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রেশন

  • নির্ধারিত তারিখে দাতা, গ্রহীতা এবং স্বাক্ষীরা উপস্থিত থাকুন।
  • সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দিন।

৭. দান পত্রে বিস্তারিত তথ্য প্রদান

  • দলিলে সম্পত্তির সঠিক বিবরণ (খতিয়ান, দাগ নম্বর, সীমানা ইত্যাদি) উল্লেখ করুন।
  • দান পত্রে দানের উদ্দেশ্য এবং শর্তাদি (যদি থাকে) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত।

৮. জালিয়াতি এড়ানোর জন্য সতর্কতা

  • জমি বা সম্পত্তির জাল দলিল থেকে সাবধান থাকুন।
  • দান পত্র এবং সংশ্লিষ্ট দলিল যাচাই করার জন্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

৯. দানের উদ্দেশ্য নিশ্চিত করুন

  • নিশ্চিত করুন যে দাতা দানের উদ্দেশ্য এবং ফলাফল সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন।
  • যদি কোনো শর্তযুক্ত দান হয়, তা দলিলে সঠিকভাবে উল্লেখ করুন।

১০. আইনি পরামর্শ নিন

  • প্রক্রিয়ার সময় একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা নিন।
  • রেজিস্ট্রেশন শেষে দলিল সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যতের জন্য কপি তৈরি রাখুন।

বিশেষ দিক নির্দেশনা

  • রেজিস্ট্রেশনের পর নামজারি নিশ্চিত করুন, যাতে দানকৃত সম্পত্তির মালিকানা গ্রহীতার নামে স্থানান্তরিত হয়।
  • জমির খাজনা (ভূমি কর) নিয়মিত পরিশোধ করুন।
  • ভবিষ্যতে কোনো আইনি সমস্যা এড়ানোর জন্য দান পত্র রেজিস্ট্রেশনের পর তা সংশ্লিষ্ট সংস্থায় রেকর্ড করুন।

এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে দান পত্র রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ, স্বচ্ছ এবং আইনসঙ্গতভাবে সম্পন্ন হবে।

Know More :

FAQ

প্রশ্ন : দান পত্র কী?

উত্তর: দান পত্র (Gift Deed) একটি আইনি নথি যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তার মালিকানাধীন সম্পত্তি বিনা মূল্যে অন্য কাউকে প্রদান করেন।

প্রশ্ন: দান পত্রে কতজন স্বাক্ষী প্রয়োজন?

উত্তর: সাধারণত দুইজন স্বাক্ষীর উপস্থিতি প্রয়োজন, যারা নিরপেক্ষ এবং প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।

প্রশ্ন : দান পত্র রেজিস্ট্রেশনের খরচ কত?

উত্তর: জমির মূল্য অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া, দলিল প্রস্তুত এবং আইনজীবীর ফি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

প্রশ্ন : দান পত্র রেজিস্ট্রেশন করতে কত সময় লাগে?

উত্তর: সাধারণত ৩-৭ কর্মদিবস সময় লাগে, তবে জমির নথি ঠিক থাকলে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *