AB Bank DPS

How To Open AB Bank DPS | এবি ব্যাংক ডিপিএস কীভাবে খুলবেন

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে AB Bank DPS নিয়ে । বাংলাদেশের ব্যাংকিং জগতে সঞ্চয় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা শুধু ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষা দেয় না, বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করে। এবি ব্যাংকের ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) এমনই একটি সুবিধা, যা আপনার সঞ্চয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করে।

AB Bank DPS কি?

এবি ব্যাংক ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) হলো একটি সঞ্চয় পরিকল্পনা যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাসিক জমার মাধ্যমে বড় একটি মূলধন তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি একটি সুনির্দিষ্ট আর্থিক সেবা, যেখানে আপনি একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য নির্ধারিত পরিমাণ টাকা জমা রাখবেন এবং মেয়াদ শেষে মূল টাকা ও সুদ একত্রে পাবেন।

মূল বৈশিষ্ট্য:

  1. নিয়মিত মাসিক সঞ্চয়: একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয়।
  2. মেয়াদ: সাধারণত ৩ বছর থেকে ১০ বছরের মধ্যে মেয়াদ নির্ধারণ করা যায়।
  3. সুদের হার: ডিপিএসের মেয়াদ ও ব্যাংকের নীতির উপর ভিত্তি করে আকর্ষণীয় সুদের হার পাওয়া যায়।
  4. পরিকল্পিত ভবিষ্যৎ: ভবিষ্যতের বড় খরচ যেমন সন্তানদের শিক্ষা, বিয়ে বা জরুরি খরচ মোকাবিলায় এটি সহায়ক।
  5. লোন সুবিধা: ডিপিএসের বিপরীতে ব্যাংক থেকে সহজে লোন নেওয়া সম্ভব।

AB Bank DPS এর গুরুত্বপূর্ণ দিক?

এবি ব্যাংকের ডিপিএস আপনার ভবিষ্যৎ সঞ্চয়ের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী পন্থা। এটি বিশেষত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যারা নিয়মিত মাসিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে একটি বড় মূলধন তৈরি করতে চান।

এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ:

  1. নিয়মিত সঞ্চয়: মাসিক নির্ধারিত একটি ছোট পরিমাণ জমা করে ভবিষ্যতে একটি বড় অংকের অর্থের মালিক হতে পারবেন।
  2. উচ্চ মুনাফা: এবি ব্যাংকের ডিপিএস-এ প্রলোভনসঙ্কুল সুদের হার পাওয়া যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে আপনার সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে।
  3. আর্থিক নিরাপত্তা: এটি জরুরি প্রয়োজনে একটি সুরক্ষার ভূমিকা পালন করে।
  4. লোন সুবিধা: আপনার ডিপিএস এর বিপরীতে সহজে লোন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  5. পরিকল্পিত ভবিষ্যৎ: বড় খরচ যেমন সন্তানদের শিক্ষার খরচ বা একটি বাড়ি কেনার জন্য আদর্শ সঞ্চয় উপায়।

এবি ব্যাংকের ডিপিএস এমন একটি সঞ্চয় পরিকল্পনা যা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রেখে ভবিষ্যতে একটি বড় অঙ্ক পেতে সাহায্য করে। এটি আপনার অর্থ সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করে এবং সময়ের সাথে সাথে আর্থিক স্থিতিশীলতা গড়ে তোলে।

AB Bank DPS এর সুবিধাগুলো

  • নিরাপদ বিনিয়োগ: আপনার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে।
  • সুদহার: ডিপিএসে আকর্ষণীয় সুদ প্রদান করা হয়, যা সময়ের সাথে বৃদ্ধি পায়।
  • লোন সুবিধা: ডিপিএসের বিপরীতে লোন নেওয়ার সুযোগ থাকে।
  • সহজ প্রসেস: ডিপিএস চালু এবং পরিচালনার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ।
  • উচ্চ সুদহার: ডিপিএসে সাধারণ সঞ্চয় হিসাবের তুলনায় বেশি সুদ প্রদান করা হয়।
  • ফ্লেক্সিবল টার্ম: বিভিন্ন মেয়াদ এবং পরিমাণ অনুযায়ী ডিপিএস অফার করে।
  • নগদ প্রাপ্যতা: মেয়াদ শেষে আপনার জমাকৃত অর্থ সুদসহ এককালীন পেয়ে যাবেন।
  • বিশ্বস্ততা: এবি ব্যাংক, বাংলাদেশের অন্যতম পুরোনো এবং বিশ্বাসযোগ্য ব্যাংক।
  • ফ্লেক্সিবল সময়কাল: আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ৩, ৫, ৭ বা ১০ বছরের জন্য ডিপিএস চালু করতে পারবেন।

সফল ডিপিএস পরিকল্পনা

সায়েমা একজন গৃহিণী, যিনি মাসে ২০০০ টাকা করে এবি ব্যাংকের ডিপিএসে জমা রাখেন। ১০ বছরের মেয়াদ শেষে তিনি মূলধন এবং সুদসহ ৩ লাখ টাকারও বেশি সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। এই সঞ্চয় দিয়ে তিনি তার সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যবস্থা করেন।

কীভাবে এবি ব্যাংক ডিপিএস খুলবেন?

ডিপিএস খুলতে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

১. উপযুক্ত শাখা নির্বাচন করুন

আপনার নিকটবর্তী এবি ব্যাংকের শাখায় যান। যদি আপনি শাখার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত না হন, তবে এবি ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা কাস্টমার কেয়ার নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

২. ডিপিএস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন

ব্যাংক কর্মীদের থেকে ডিপিএসের বিভিন্ন অপশন, সুদের হার এবং শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন

ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে নিচের ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন:

  • আপনার বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট।
  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  • বিদ্যমান অ্যাকাউন্ট থাকলে তার ডিটেলস।
  • ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইলেকট্রিসিটি বিল বা অন্যান্য ডকুমেন্ট।

৪. জমার পরিমাণ এবং মেয়াদ নির্ধারণ করুন

আপনার মাসিক সঞ্চয় ক্ষমতা এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে জমার পরিমাণ এবং ডিপিএসের মেয়াদ নির্ধারণ করুন। এবি ব্যাংক সাধারণত ৩, ৫, ৭ বা ১০ বছরের মেয়াদের ডিপিএস অফার করে।

৫. প্রথম জমা প্রদান করুন

ডিপিএস চালু করতে প্রথম মাসের অর্থ জমা দিন। এটি নগদে বা আপনার বিদ্যমান অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ডেবিট করা যেতে পারে।

৬. ডিপিএস অ্যাকাউন্ট চালু করুন

সকল কাগজপত্র এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়ার পর আপনার ডিপিএস চালু হয়ে যাবে। ব্যাংক থেকে একটি চালানের মাধ্যমে আপনাকে কনফার্মেশন প্রদান করা হবে।

AB Bank DPS কেন এটি একটি ভালো পরিকল্পনা?

ডিপিএস হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখার স্কিম, যা ভবিষ্যতে একটি বড় অঙ্কে পরিণত হয়। এবি ব্যাংক ডিপিএসের মাধ্যমে আপনি:

  • সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সঞ্চয় করতে পারেন: এটি ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে (যেমন, সন্তানের পড়াশোনা, বাড়ি নির্মাণ বা ব্যবসা শুরু) সাহায্য করে।
  • সুদের সুবিধা উপভোগ করতে পারেন: অন্যান্য সঞ্চয় পদ্ধতির তুলনায় এটি সুদে বেশি লাভজনক।
  • আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন: আপনার সঞ্চিত অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে।

একটি বাস্তব উদাহরণ: সফল ডিপিএস গল্প

হাসান একজন সরকারি চাকরিজীবী, যিনি প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা এবি ব্যাংকের ডিপিএসে জমা রাখেন। ১০ বছরের মেয়াদ শেষে তার সঞ্চয়ের অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। তিনি এই অর্থ দিয়ে তার বাড়ির সংস্কার কাজ শেষ করেন এবং একটি ছোট ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন।

ডিপিএস সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

১. সুদের হার কেমন?

এবি ব্যাংকের ডিপিএসে সুদের হার নির্ধারণ করা হয় নির্দিষ্ট মেয়াদ এবং জমার পরিমাণের উপর ভিত্তি করে। বিস্তারিত জানার জন্য শাখায় যোগাযোগ করুন।

২. ডিপিএস বন্ধ করতে চাইলে কী করবেন?

জরুরি প্রয়োজনে মেয়াদের আগেই ডিপিএস বন্ধ করা যেতে পারে। তবে এতে কিছু জরিমানা আরোপ হতে পারে।

৩. ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কোনো চার্জ আছে কি?

সাধারণত ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অতিরিক্ত চার্জ নেই।

৪. ডিপিএসের বিপরীতে লোন নেওয়া যায় কি?

হ্যাঁ, ডিপিএসের জমাকৃত অর্থের ৮০%-৯০% পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়।

AB Bank DPSর সুদের হার এবং সময়কাল

এবি ব্যাংকের ডিপিএসের সুদের হার এবং সময়কাল নির্ভর করে আপনার জমার পরিমাণ এবং ডিপিএসের মেয়াদের উপর। নিচে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া হলো:

মেয়াদ (বছর)সুদের হার (%)ন্যূনতম মাসিক জমা (টাকা)
৩ বছর৬%৫০০
৫ বছর৭%১০০০
৭ বছর৭.৫%১০০০
১০ বছর৮%৫০০০

দ্রষ্টব্য: সুদের হার সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে। বর্তমান হার জানার জন্য ব্যাংকে যোগাযোগ করুন।

ডিপিএস ভাঙার শর্তাবলী (Broken Terms)

ডিপিএস মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বন্ধ করতে চাইলে কিছু শর্ত প্রযোজ্য হয়:

  1. জরিমানা: সাধারণত মূল টাকার ওপর ১-২% জরিমানা আরোপিত হয়।
  2. কম সুদ: মেয়াদ পূর্ণ না হওয়ায় জমাকৃত টাকার জন্য সাধারণ সঞ্চয় হিসাবের সুদ প্রদান করা হয়।
  3. নোটিশের প্রয়োজন: ডিপিএস বন্ধ করার জন্য ব্যাংককে আগেই নোটিশ দিতে হতে পারে।
  4. প্রক্রিয়াকাল: ডিপিএস বন্ধ করার জন্য ৭-১০ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে।

ডিপিএসের বিপরীতে লোন সুবিধা

এবি ব্যাংক ডিপিএসের বিপরীতে গ্রাহকদের লোন সুবিধা প্রদান করে। এই সুবিধার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  • লোনের পরিমাণ: আপনার জমাকৃত অর্থের ৮০%-৯০% পর্যন্ত লোন পাওয়া যাবে।
  • সুদের হার: সাধারণত ডিপিএস সুদের হার + ২% অতিরিক্ত সুদ।
  • লোনের মেয়াদ: লোনের মেয়াদ ডিপিএসের অবশিষ্ট মেয়াদের সঙ্গে মিলিয়ে নির্ধারণ করা হয়।
  • দ্রুত প্রসেসিং: ডিপিএসের বিপরীতে লোন দ্রুততম সময়ে প্রদান করা হয়।
  • শর্তাবলী: লোন সময়মতো পরিশোধ না করলে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হবে।

ডিপিএসের লুকানো শর্তাবলী

এবি ব্যাংক ডিপিএসের কিছু লুকানো শর্ত রয়েছে যা আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে:

  1. পরিশোধের সময়কাল: মাসিক জমা সময়মতো পরিশোধ না করলে জরিমানা আরোপিত হতে পারে।
  2. অ্যাকাউন্ট মেইন্টেন্যান্স ফি: ডিপিএস চালু রাখতে কিছু ফি প্রযোজ্য হতে পারে।
  3. প্রারম্ভিক চার্জ: কিছু ক্ষেত্রে ডিপিএস খোলার সময় প্রসেসিং চার্জ নেওয়া হয়।
  4. ফান্ড অ্যাডজাস্টমেন্ট: যদি ডিপিএসের বিপরীতে লোন নেওয়া হয় এবং তা পরিশোধ করা না হয়, তবে আপনার জমাকৃত অর্থ থেকে তা সমন্বয় করা হবে।
  5. ইনকাম ট্যাক্স: মেয়াদ শেষে প্রাপ্ত সুদের উপর কর কর্তন হতে পারে।

আরও জানুনঃ

FAQ

প্রশ্ন ১:AB Bank DPS খোলার জন্য ন্যূনতম জমার পরিমাণ কত?

উত্তর: ৫০০ টাকা থেকে ডিপিএস শুরু করা যায়।

প্রশ্ন : লোন নেওয়ার শর্ত কী কী?

উত্তর: জমাকৃত অর্থের ৮০%-৯০% পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়। সুদের হার ডিপিএসের সুদ + ২%।

প্রশ্ন ৩: ডিপিএস বন্ধ করতে কত সময় লাগে?

উত্তর: সাধারণত ৭-১০ কার্যদিবস সময় লাগে।

প্রশ্ন ৪: ডিপিএস সুদের উপর কর প্রযোজ্য কি?

উত্তর: হ্যাঁ, মেয়াদ শেষে প্রাপ্ত সুদের উপর সরকার নির্ধারিত কর প্রযোজ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *