Bkash DPS

How To Open Bkash DPS | বিকাশ ডিপিএস কীভাবে খুলবেন

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে Bkash DPS নিয়ে। বাংলাদেশে সঞ্চয়ের জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ডিপিএস। আর এখন যখন বিকাশ এই সেবা অফার করছে, তখন সঞ্চয় করা আরও সহজ এবং সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।

যা যা থাকছে

বিকাশ ডিপিএস কী?

বিকাশ ডিপিএস একটি সঞ্চয়মুখী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এটি এমন একটি সেবা যেখানে মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে একটি উল্লেখযোগ্য সুদের সাথে টাকা তুলতে পারেন। এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে সেইসব মানুষের জন্য যারা সহজেই ছোট ছোট সঞ্চয়ের মাধ্যমে একটি বড় পরিমাণ অর্থ জমা করতে চান।

Bkash DPS খোলার প্রয়োজনীয়তা

বিকাশ ডিপিএস চালু করার আগে কিছু জিনিস নিশ্চিত করতে হবে:

  • আপনার একটি সক্রিয় বিকাশ একাউন্ট থাকতে হবে।
  • এনআইডি এবং বিকাশে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর।
  • আপনার ব্যাংকিং তথ্য (যদি প্রয়োজন হয়)।

Bkash DPS ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া

১. বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড ও লগইন

প্রথমে আপনার মোবাইলে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন। যদি ইতিমধ্যে অ্যাপটি ব্যবহার করেন, তাহলে লগইন করুন।

২. সঞ্চয় বা ডিপিএস সেকশন খুঁজুন

বিকাশ অ্যাপের হোমপেজ থেকে “সঞ্চয়” বা “ডিপিএস” অপশনটি নির্বাচন করুন। এটি সাধারণত অ্যাপের মেনুতে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।

৩. ডিপিএস প্যাকেজ নির্বাচন

আপনার মাসিক সঞ্চয়ের পরিমাণ এবং সময়কাল নির্বাচন করুন। বিকাশ বিভিন্ন প্যাকেজ অফার করে, যেমন ১ বছর, ৩ বছর বা ৫ বছরের ডিপিএস।

৪. ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান

এনআইডি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিন। নিশ্চিত করুন যে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করা হয়েছে।

৫. প্রাথমিক জমা নিশ্চিত করুন

ডিপিএস চালু করার জন্য প্রাথমিক জমা দেওয়া প্রয়োজন। এটি আপনার বিকাশ ব্যালেন্স থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হবে।

৬. নিশ্চিতকরণ ও চালু

প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে, আপনাকে একটি নিশ্চিতকরণ মেসেজ পাঠানো হবে। এখান থেকে আপনি প্রতিমাসে কিস্তি জমা দেওয়া শুরু করতে পারবেন।

বিকাশ ডিপিএস কেন বেছে নেবেন?

  1. সহজলভ্যতা: যে কোনো সময়, যে কোনো স্থান থেকে এটি পরিচালনা করা যায়।
  2. নিরাপত্তা: আপনার টাকা পুরোপুরি সুরক্ষিত।
  3. স্বয়ংক্রিয় কিস্তি: প্রতিমাসে টাকা জমা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।
  4. সুদ লাভ: সময় শেষে সুদের মাধ্যমে ভালো রিটার্ন পাবেন।

Bkash DPS খোলার সুবিধাগুলো

১. সুবিধাজনক সেবা

বিকাশ অ্যাপ থেকে মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই ডিপিএস চালু করা যায়। ব্যাংকে লম্বা লাইন দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

২. স্বয়ংক্রিয় কিস্তি জমা

আপনার বিকাশ ব্যালেন্স থেকে নির্ধারিত সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিস্তি কেটে নেওয়া হবে, তাই আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই।

৩. নিরাপদ সঞ্চয়

বিকাশ ডিপিএস বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রিত একটি সেবা। ফলে এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।

৪. সুদসহ রিটার্ন

ডিপিএস মেয়াদ শেষে আপনি জমাকৃত টাকার সঙ্গে সুদও পাবেন।

৫. নিম্নতম কিস্তির সুবিধা

মাত্র ৫০০ টাকার মতো ছোট পরিমাণ দিয়েও সঞ্চয় শুরু করা যায়।

Bkash DPS খোলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র

বিকাশ ডিপিএস চালু করার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনি নিচের জিনিসগুলো প্রস্তুত করেছেন:

  • সক্রিয় বিকাশ অ্যাকাউন্ট: বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন এবং অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড আছে কিনা চেক করুন।
  • এনআইডি কার্ড: আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি স্ক্যান বা ছবি প্রয়োজন হতে পারে।
  • বিকাশ অ্যাপ: আপনার ডিভাইসে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করা থাকতে হবে।
  • প্রাথমিক জমার টাকা: প্রাথমিক কিস্তি জমা দেওয়ার জন্য বিকাশ ব্যালেন্সে পর্যাপ্ত টাকা নিশ্চিত করুন।

বিকাশ ডিপিএসের জন্য সেরা টিপস

  1. কিস্তি জমার সময়ে সচেতন থাকুন: নিশ্চিত করুন যে আপনার বিকাশ একাউন্টে কিস্তি কেটে নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রয়েছে।
  2. লং-টার্ম সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করুন: বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করে ডিপিএসের মেয়াদ ঠিক করুন।
  3. ডিপিএস রিটার্ন চেক করুন: বিভিন্ন প্যাকেজের সুদের হার তুলনা করে সেরা প্যাকেজটি বেছে নিন।
  4. অতিরিক্ত ব্যয় এড়ান: প্রতিমাসে ডিপিএস কিস্তি জমা দেওয়ার জন্য আপনার বাজেটে অতিরিক্ত খরচ কমানোর চেষ্টা করুন।
  5. প্ল্যানিং করুন: ডিপিএস খোলার আগে মাসিক কিস্তি দেওয়ার সক্ষমতা যাচাই করুন।
  6. রেগুলার ব্যালেন্স রাখুন: কিস্তি জমা রাখতে অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রাখুন।
  7. আর্থিক লক্ষ্য ঠিক করুন: আপনার লক্ষ্য স্পষ্ট হলে সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা সহজ হবে।
  8. নিয়মিত অ্যাপ চেক করুন: সঞ্চয়ের অগ্রগতি ট্র্যাক করুন এবং প্রয়োজন হলে প্যাকেজ পরিবর্তন করুন।

Bkash DPS নিয়ে সাধারণ ভুল ধারণা

১. বিকাশ ডিপিএসের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন?

না, শুধুমাত্র বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকলেই আপনি ডিপিএস চালু করতে পারবেন।

২. সুদের হার কম?

অনেকেই মনে করেন বিকাশ ডিপিএসের সুদের হার কম। তবে বিকাশের প্যাকেজ অনুযায়ী সুদের হার প্রতিযোগিতামূলক এবং সঞ্চয়ের জন্য লাভজনক।

৩. ডিপিএস ভাঙতে বেশি ঝামেলা?

Bkash DPS বন্ধ করার প্রক্রিয়া খুব সহজ এবং সম্পূর্ণ অ্যাপের মাধ্যমে করা যায়।

কেন বিকাশ ডিপিএস ব্যবহার করবেন?

  1. ডিজিটাল সুবিধা: এই সেবা সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে, কোনো ব্যাংক ব্রাঞ্চে যেতে হয় না।
  2. সহজ প্রক্রিয়া: কয়েক মিনিটেই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।
  3. নিরাপত্তা: এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত, ফলে সম্পূর্ণ নিরাপদ।
  4. উপযুক্ত মেয়াদ: ১, ৩, বা ৫ বছরের ডিপিএস প্যাকেজ থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ।
  5. মাসিক স্বয়ংক্রিয় কিস্তি: ব্যালেন্স থাকলে নির্দিষ্ট দিনে কিস্তি জমা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া হয়।

কাদের জন্য বিকাশ ডিপিএস?

  1. ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য: যারা পড়ালেখার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চায়।
  2. নতুন চাকরিজীবীদের জন্য: যারা ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে চায়।
  3. ব্যবসায়ীদের জন্য: অতিরিক্ত আয়ের কিছু অংশ সঞ্চয়ে রাখতে চান।
  4. গৃহিণীদের জন্য: যারা তাদের মাসিক বাজেট থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চয় করতে চান।

সঞ্চয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ডিপিএস শুধু টাকা জমা করার বিষয় নয়, এটি একটি বড় লক্ষ্য পূরণের জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা।

  • বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ: দীর্ঘমেয়াদি ডিপিএস ভবিষ্যতে সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য একটি বড় সাহায্য হতে পারে।
  • বাড়ি কেনার জন্য ডাউন পেমেন্ট: দীর্ঘমেয়াদে সঞ্চয় ভবিষ্যতে একটি বাড়ি কেনার জন্য সাহায্য করবে।
  • জরুরি ফান্ড: ভবিষ্যতের অনিশ্চিত মুহূর্তের জন্য একটি সুরক্ষিত ফান্ড তৈরি করা সম্ভব।

Bkash DPS সুদের হিসাব

সুদের হার নির্ভর করে মেয়াদ এবং মাসিক কিস্তির উপর। উদাহরণস্বরূপ:

  1. ৫০০ টাকা মাসিক কিস্তিতে ১ বছরের মেয়াদে মোট প্রাপ্তি হতে পারে ৬২০০ টাকা (প্রায়)।
  2. ১০০০ টাকা মাসিক কিস্তিতে ৩ বছরের মেয়াদে প্রাপ্তি হতে পারে ৩৮,০০০ টাকা (প্রায়)।

সতর্কতা: সুদের হার সময় ও প্যাকেজ অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে। বিকাশ অ্যাপ থেকে বর্তমান হার জেনে নিন।

Bkash DPS ভাঙার নিয়ম

বিকাশ ডিপিএস মাঝপথে ভাঙতে চাইলে নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মানতে হবে:

  1. বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “ডিপিএস ক্লোজ” অপশন বেছে নিন।
  2. প্রয়োজনীয় তথ্য দিন এবং নিশ্চিত করুন।
  3. প্রাপ্ত অর্থ আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হবে।

বিঃদ্রঃ: মেয়াদের আগেই ভাঙলে প্রাপ্ত সুদের পরিমাণ কমে যেতে পারে।

বিকাশ ডিপিএস ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা

ব্যবহারকারী ১:

নাম: রিয়াজুল ইসলাম
অভিজ্ঞতা: “আমি মাসে মাত্র ১০০০ টাকা সঞ্চয় শুরু করেছিলাম। ৩ বছরের মেয়াদে এটি আমাকে ৩৭,৫০০ টাকার বেশি দিয়েছে। আমার ছোট ব্যবসার জন্য এটি অনেক সহায়ক ছিল।”

ব্যবহারকারী ২:

নাম: শারমিন আক্তার
অভিজ্ঞতা: “বাচ্চার পড়াশোনার খরচের জন্য আমি বিকাশ ডিপিএস চালু করি। এটি একেবারে ঝামেলামুক্ত এবং সময়মতো পেমেন্ট নিশ্চিত করে।”

আরও জানুনঃ

FAQ

প্রশ্ন ১: Bkash DPS চালু করতে কি কোনো চার্জ আছে?

উত্তর: না, ডিপিএস খোলার জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ নেই।

প্রশ্ন ২: মাসিক কিস্তির সর্বনিম্ন পরিমাণ কত?

উত্তর: মাসিক কিস্তির সর্বনিম্ন পরিমাণ ৫০০ টাকা। তবে এটি নির্ভর করে আপনার প্যাকেজের উপর।

প্রশ্ন ৩: Bkash DPS কতদিনের জন্য খোলা যায়?

উত্তর: বিকাশ ডিপিএস ১ বছর, ৩ বছর বা ৫ বছরের মেয়াদে খোলা যায়।

প্রশ্ন ৪: ডিপিএস বন্ধ করলে কী হবে?

উত্তর: ডিপিএসের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বন্ধ করলে আপনার সুদের হার কম হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *