How to Get a Loan from Probashi Kallyan Bank | কীভাবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয়

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে How to Get a Loan from Probashi Kallyan Bank নিয়ে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে, এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ ও উন্নয়ন। ব্যাংকটি বিভিন্ন ধরনের লোন পণ্য সরবরাহ করে, যেমন ব্যক্তিগত লোন, হোম লোন, এবং শিক্ষা লোন, যা প্রবাসী পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করে।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্প্রতি অনেক উন্নতি করেছে, বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক (প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক) হলো একটি প্রতিষ্ঠান যা প্রবাসীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে, তাদের আর্থিক সমস্যার সমাধান করতে।

যা যা থাকছে

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোন ধরনের লোন প্রদান করে

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করে, যেমন:

ব্যক্তিগত লোন

ব্যক্তিগত প্রয়োজনের জন্য, যেমন চিকিৎসা খরচ বা বিবাহের জন্য, ব্যবহৃত হয়। ব্যাংকটি নমনীয় কিস্তির ব্যবস্থা এবং প্রতিযোগী সুদের হার প্রদান করে।

হোম লোন

যারা দেশে সম্পত্তি ক্রয় করতে চান, তাদের জন্য হোম লোনের সুযোগ রয়েছে। এই লোনের মেয়াদ ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে, যা ঋণগ্রহীতার জন্য সহজ।

শিক্ষা লোন

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শিক্ষার্থীদের জন্যও শিক্ষা লোন প্রদান করে থাকে। প্রবাসী পরিবারগুলোর সন্তানদের উচ্চশিক্ষা বা পেশাগত প্রশিক্ষণের জন্য এই লোন প্রদান করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করে।

বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য লোন

  • যারা প্রবাসে কর্মসংস্থানের জন্য যেতে চান তাদের জন্য এই লোন বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। বিদেশ যাওয়ার খরচ যেমন- ভিসা ফি, ট্রাভেল খরচ, মেডিকেল টেস্ট ইত্যাদি বহনে সহায়তা করে। এতে প্রবাসীরা বিদেশযাত্রার প্রক্রিয়া সহজ করতে পারেন।

পুনর্বাসন লোন

  • যারা প্রবাস থেকে দেশে ফিরে এসেছেন এবং পুনর্বাসন বা কর্মসংস্থানের প্রয়োজন রয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসন লোন প্রদান করা হয়। এই লোনের মাধ্যমে তারা দেশে ব্যবসা শুরু করতে পারেন বা পেশাগত জীবনে পুনর্বাসন ঘটাতে পারেন।

ব্যবসায়িক লোন

  • প্রবাসে আয় করে দেশে ফিরে যারা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান তাদের জন্য ব্যবসায়িক লোন একটি আদর্শ সমাধান। এই লোন দিয়ে ছোট বা মাঝারি আকারের ব্যবসা শুরু করা যায় যা ভবিষ্যতে তাদের আয়ের একটি স্থায়ী উৎস হতে পারে।

আপদকালীন (ইমার্জেন্সি) লোন

  • বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতিতে যেমন- দুর্ঘটনা, স্বাস্থ্য সমস্যা, বা অন্যান্য ব্যক্তিগত আপদকালীন সময়ে এই লোন প্রদান করা হয়। প্রবাসীরা যখন জরুরি অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েন, তখন এই লোন তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

পরিবার সহায়তা লোন

  • প্রবাসে থাকা অবস্থায় প্রবাসীদের পরিবার যারা দেশে আছেন তাদের বিভিন্ন আর্থিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য এই লোন প্রদান করা হয়। এটি পরিবারের চিকিৎসা খরচ, শিক্ষা খরচ বা অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করতে সহায়ক।

বিনিয়োগ লোন

  • প্রবাসীরা যারা দেশে তাদের সঞ্চয় বিনিয়োগে ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য বিনিয়োগ লোন সহায়ক। এই লোন তাদের বিভিন্ন সঞ্চয় ও বিনিয়োগের প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের এই বিভিন্ন ধরনের লোন সুবিধা প্রবাসী ও তাদের পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও পুনর্বাসনের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

Source: Youtube

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার প্রক্রিয়া

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া একটি সহজ প্রক্রিয়া। নিচে পর্যায়ক্রমে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো:

১. আবেদনপত্র সংগ্রহ

  • প্রথমেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের নিকটস্থ শাখা থেকে লোনের জন্য নির্ধারিত আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকেও আবেদনপত্র ডাউনলোড করা যায়।

২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতকরণ

  • আবেদনপত্রের সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
    • বৈধ পাসপোর্টের ফটোকপি
    • ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিটের ফটোকপি (যদি থাকে)
    • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
    • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
    • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (বাধ্যতামূলক নয়, তবে সহায়ক)
    • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত যেকোনো অতিরিক্ত নথিপত্র

৩. আবেদন জমা

  • আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের শাখায় জমা দিতে হবে। আবেদন জমার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদন যাচাই বাছাই করবে।

৪. আবেদন যাচাই ও সাক্ষাৎকার

  • আবেদন যাচাইয়ের পর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডেকে নেয়। এই সাক্ষাৎকারে ব্যাংক কর্মকর্তারা আবেদনকারীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা, লোনের উদ্দেশ্য, এবং পরিশোধের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসা করেন।

৫. ঋণ অনুমোদন এবং মঞ্জুরিপত্র প্রদান

  • আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ অনুমোদন করলে একটি মঞ্জুরিপত্র (Sanction Letter) প্রদান করে। এতে ঋণের শর্তাবলী, সুদের হার, এবং পরিশোধের সময়সীমা উল্লেখ থাকে।

৬. চুক্তিপত্র স্বাক্ষর

  • মঞ্জুরিপত্র পাওয়ার পর, ঋণগ্রহীতা ব্যাংকের সাথে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়। এতে ঋণের শর্তাবলী এবং পরিশোধের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়।

৭. ঋণ বিতরণ

  • চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের পর, ব্যাংক আবেদনকারীর নামে নির্ধারিত লোনের অর্থ বিতরণ করে। সাধারণত, এই অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হয় এবং প্রয়োজনে আবেদনকারী তা নগদে তুলতে পারেন।

৮. কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ

  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়, যা আবেদনকারীর আয়ের উপর ভিত্তি করে নমনীয়ভাবে নির্ধারিত হয়। মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বাৎসরিক কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করা যায়, যা আবেদনকারীর পক্ষে সুবিধাজনক।

৯. পরিশোধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ

  • ঋণ পরিশোধের প্রক্রিয়া চলাকালীন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণগ্রহীতার অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজন হলে নতুন সুবিধা বা পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর লোনের পরিশোধের মেয়াদ কত

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে নেওয়া লোনের পরিশোধের মেয়াদ সাধারণত বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে, যেমন লোনের ধরন, পরিমাণ এবং ঋণগ্রহীতার অর্থনৈতিক অবস্থান। তবে, নিচে বিভিন্ন ধরনের লোনের জন্য সাধারণত প্রযোজ্য পরিশোধের মেয়াদ উল্লেখ করা হলো:

১. বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য লোন

  • এই ধরনের লোনের জন্য সাধারণত ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পরিশোধের মেয়াদ থাকে।

২. পুনর্বাসন লোন

  • পুনর্বাসনের জন্য নেওয়া লোনের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।

৩. ব্যবসায়িক লোন

  • ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নেওয়া লোনের মেয়াদ ২ থেকে ৫ বছর হতে পারে, যা ব্যবসার ধরণ ও চাহিদার উপর নির্ভর করে।

৪. শিক্ষা লোন

  • শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া লোনের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত হয়, যা শিক্ষার মেয়াদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

৫. আপদকালীন (ইমার্জেন্সি) লোন

  • এই ধরনের লোনের মেয়াদ সাধারণত ১ থেকে ৩ বছর হয়ে থাকে।

৬. পরিবার সহায়তা লোন

  • পরিবারের সহায়তা লোনের মেয়াদ সাধারণত ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে, যা পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

৭. বিনিয়োগ লোন

  • বিনিয়োগের জন্য নেওয়া লোনের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

৮. লোন পরিশোধের কিস্তি

  • লোন পরিশোধের জন্য কিস্তি পরিমাণ এবং মেয়াদ ব্যাংকের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত হয়। সাধারণত মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বাৎসরিক কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোনের পরিশোধের মেয়াদ সম্পর্কিত নির্দিষ্ট তথ্য ব্যাংকের শাখা থেকে পাওয়া যায় এবং এটি ঋণগ্রহীতার প্রয়োজন ও আর্থিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। ঋণগ্রহীতা হিসেবে আপনার সুবিধার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নির্ধারণ করা উচিত।

আরও জানুনঃ

FAQ

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কী?

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হলো একটি ব্যাংক যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে এবং তাদের জন্য বিভিন্ন লোন পণ্য সরবরাহ করে।

ব্যাংকটি কোন ধরনের লোন প্রদান করে?

ব্যাংকটি ব্যক্তিগত লোন, হোম লোন, এবং শিক্ষা লোন প্রদান করে।

লোনের পরিশোধের মেয়াদ কত?

লোনের মেয়াদ লোনের ধরনের উপর নির্ভর করে, হোম লোন ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।