কিভাবে বেসিব ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হবে | How to Open Basic Bank Account

Rate this post

আজকে আমরা আলোচনা করব আপনাদের মাঝে Basic Bank Account নিয়ে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং সেবার গুরুত্ব অপরিসীম। আর্থিক লেনদেনকে সহজতর ও নিরাপদ করে তোলার ক্ষেত্রে বেসিক ব্যাংক লিমিটেড অ্যাকাউন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আপনি যদি অর্থ সংরক্ষণ, লেনদেন পরিচালনা, বা আর্থিক পরিকল্পনা শুরু করতে চান, তাহলে একটি বেসিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে।

যা যা থাকছে

বেসিক ব্যাংক লিমিটেড কী?

বেসিক ব্যাংক লিমিটেড হলো বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি ব্যাংক, যা গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে। এটি ব্যক্তিগত ব্যাংকিং, কর্পোরেট ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এবং মোবাইল ব্যাংকিংসহ বহু সুবিধা প্রদান করে থাকে।

Basic Bank Account কেন খোলা উচিত?

বেসিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে যা আপনার আর্থিক স্থিতি ও উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।

1. আর্থিক নিরাপত্তা: ব্যাংকে টাকা রাখা নগদ টাকা বহন করার ঝুঁকি থেকে মুক্তি দেয় এবং আপনার অর্থ সুরক্ষিত রাখে। এটি জরুরি সময়ে দ্রুত অর্থপ্রাপ্তির সুবিধা প্রদান করে।

2. সহজ লেনদেন: বেসিক ব্যাংক মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ঘর বসেই টাকা জমা বা উত্তোলন করা যায়, যা সময় ও প্রচেষ্টা বাঁচায়।

3. আর্থিক পরিকল্পনা: একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার ফলে আপনার আর্থিক লেনদেনের একটি স্পষ্ট রেকর্ড পাওয়া যায়, যা আপনার বাজেট পরিকল্পনা ও আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক।

4. বিভিন্ন সুবিধা: বেসিক ব্যাংক লিমিটেড বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড, ঋণ, এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে, যা আপনার আর্থিক প্রয়োজন পূরণে সাহায্য করে।

বেসিব ব্যাংকের প্রধান সুবিধাগুলো

  1. সহজ ডিপোজিট এবং উত্তোলন প্রক্রিয়া।
  2. অনলাইন এবং মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা।
  3. লোন সুবিধা, যা শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক।
  4. গ্রাহকদের জন্য কম ফি এবং চার্জ।
  5. সুরক্ষিত সঞ্চয়: আপনার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকবে।
  6. মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা: মোবাইল থেকেই যেকোনো লেনদেন করুন।
  7. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: মাসিক বাজেট এবং সঞ্চয় ব্যবস্থাপনা সহজ হবে।
  8. বিনিয়োগের সুযোগ: ফিক্সড ডিপোজিট বা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
  9. নিরাপত্তা: আপনার অর্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেসিব ব্যাংক।
  10. বহুমুখী অ্যাকাউন্ট টাইপ: সেভিংস অ্যাকাউন্ট, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, এবং অন্যান্য বিশেষ অ্যাকাউন্ট সুবিধা।
  11. গ্রাহক সেবা: ২৪/৭ গ্রাহক সেবা সহায়তা।
  12. দ্রুত লেনদেনের সুযোগ: বেসিব ব্যাংকের অনলাইন এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা আপনার যেকোনো লেনদেনকে সহজ করে তুলবে।
  13. ইএফটি এবং আরটিজিএস সুবিধা: এই ব্যাংক আপনাকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) এবং রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) সুবিধা প্রদান করে, যা অন্য ব্যাংকের তুলনায় দ্রুত।
  14. ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী: বেসিব ব্যাংক ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে লোন প্রদান করে।
  15. শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা
  • স্টুডেন্ট লোন।
  • একাউন্টে কম ডিপোজিট দিয়ে শুরু করার সুযোগ।

Basic Bank Account এর বিভিন্ন একাউন্টে এর বিভিন্ন সুবিধা

বেসিব ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের একাউন্ট অফার করে, যা গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী নির্ধারণ করা যায়। নিচে একাউন্টের প্রধান ধরনগুলো এবং তাদের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো।

১. সেভিংস একাউন্ট

যাঁরা সঞ্চয় করতে চান, তাঁদের জন্য এটি সেরা।

  • কম ডিপোজিটে একাউন্ট খোলার সুযোগ।
  • সুদের হার তুলনামূলক বেশি।
  • ডেবিট কার্ড এবং চেকবই সরবরাহ।

২. কারেন্ট একাউন্ট

দৈনন্দিন লেনদেনের জন্য উপযুক্ত।

  • ব্যবসায়ীদের জন্য আদর্শ।
  • সীমাহীন লেনদেনের সুবিধা।
  • কোনো সুদ নেই।

৩. ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট

নির্দিষ্ট সময়ের জন্য উচ্চ সুদে সঞ্চয়ের সুযোগ।

  • নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বেশি রিটার্ন।
  • স্বল্প সময়েও ডিপোজিট করা যায়।

৪. শিক্ষার্থী একাউন্ট (Student Account)

যাঁরা শিক্ষার্থী, তাঁদের জন্য বিশেষ সেবা।

  • কম ডিপোজিট।
  • মাসিক চার্জ নেই।
  • অনলাইনে সহজ লেনদেন।

৫. নারী একাউন্ট (Women’s Savings Account)

নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধাযুক্ত একাউন্ট।

  • কম ডিপোজিটে একাউন্ট খোলার সুযোগ।
  • নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ লোন সুবিধা।

কিভাবে Basic Bank Account খুলতে হবে এর প্রক্রিয়া

১. সঠিক অ্যাকাউন্টের ধরন নির্বাচন করুন

বেসিব ব্যাংকে বিভিন্ন ধরনের একাউন্ট আছে:

  • সেভিংস একাউন্ট: যারা সঞ্চয় করতে চান।
  • চেকিং একাউন্ট: ব্যবসার লেনদেনের জন্য উপযুক্ত।
  • ফিক্সড ডিপোজিট: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য টাকা সঞ্চয় করে বেশি সুদ পাওয়ার সুযোগ।

২. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করুন

বেসিব ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে যে কাগজপত্র লাগবে:

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • পাসপোর্ট সাইজের ২টি ছবি।
  • একজন নমিনির ছবি ও তথ্য।
  • বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিল)।

৩. নিকটস্থ শাখায় যান

নিজের এলাকার নিকটবর্তী বেসিব ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করুন।
টিপস: অনেকে এখন অনলাইনে ফর্ম ডাউনলোড করার সুবিধাও পাচ্ছেন।

৪. ফর্ম পূরণ এবং জমা দিন

ফর্মে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন।

  • নিজের ব্যক্তিগত তথ্য।
  • নমিনির তথ্য।
  • আয় এবং পেশার বিবরণ।

৫. জমা করুন প্রথম ডিপোজিট

বেসিব ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, একটি নতুন একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয় (সাধারণত ৫০০-১০০০ টাকা)।

৬. অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং চেকবই সংগ্রহ করুন

আপনার জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ব্যাংক থেকে অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পাবেন।

বেসিব ব্যাংক এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য:

  • লো ফি এবং চার্জ: অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় লেনদেন এবং একাউন্ট ব্যবস্থাপনায় কম খরচ।
  • অনলাইন এবং মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা: আপনার মোবাইল থেকেই লেনদেন করা যাবে।
  • লোন সুবিধা: ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সেবা।
  • গ্রামীণ ব্যাংকিং সুবিধা: শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য সেবা।

সফলভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা

  • তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন: অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম পূরণ করার সময় সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে এবং স্পষ্টভাবে দিন। ভুল তথ্য প্রদান করলে প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে।
  • ডকুমেন্টস প্রস্তুত রাখুন: সব ডকুমেন্টস প্রস্তুত এবং আপডেটেড রাখুন। এতে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।
  • ব্যাংকের শর্তাবলী পড়ুন: প্রতিটি ব্যাংকের শর্তাবলী আলাদা হতে পারে। অ্যাকাউন্ট খোলার আগে ব্যাংকের শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ে বুঝে নিন।
  • প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করুন: যেকোনো অস্পষ্টতা থাকলে ব্যাংকের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করুন। তারা আপনাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।
  • ডিজিটাল সেবার সুবিধা নিন: অ্যাকাউন্ট খোলার পর ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার সুবিধা নিন যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি। এতে লেনদেন করা আরও সহজ হবে।

সাধারণ ভুল এবং সতর্কতা

  • ফর্ম পূরণ করার সময় ভুল তথ্য এড়িয়ে চলুন।
  • নমিনির তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন।
  • প্রথম ডিপোজিটের রশিদ সংরক্ষণ করুন।

সাধারণ ভুল এবং প্রতিরোধের উপায়

  • ভুল তথ্য প্রদান: ফর্ম পূরণের সময় আপনার সঠিক তথ্য নিশ্চিত করুন।
  • দেরি করা: প্রথম ডিপোজিট এবং ফর্ম জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করবেন না।
  • রশিদ সংরক্ষণ না করা: প্রতিটি লেনদেনের রশিদ সংরক্ষণ করুন।

বেসিব ব্যাংক এর সুদের হার এবং সময়কাল

বেসিব ব্যাংক তাদের একাউন্টের প্রকারভেদ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন সুদের হার অফার করে। নিচে প্রধান একাউন্টগুলোর সুদের হার এবং সময়কাল সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হলো:

১. সেভিংস একাউন্ট (Savings Account):

  • সুদের হার: ৩.৫% – ৪.৫% (বার্ষিক)
  • সুদের যোগ করার সময়কাল: প্রতি তিন মাসে একবার (quarterly)।
  • সর্বনিম্ন ব্যালেন্স: ৫,০০০ টাকা থাকলেই সুদ প্রযোজ্য।

২. ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit):

  • সুদের হার: ৭.৫% – ৯% (মেয়াদের উপর নির্ভরশীল)।
  • মেয়াদ: ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর, এবং ৫ বছর।
  • ভাঙা শর্তাবলী:
    • মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ভাঙলে সুদের হার কমে ৩%-এ নেমে আসতে পারে।
    • কিছু ক্ষেত্রে, প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেওয়া হয়।

৩. কারেন্ট একাউন্ট (Current Account):

  • সুদের হার: কোনো সুদ প্রযোজ্য নয়।
  • বিনামূল্যে লেনদেনের সুবিধা।

ব্রোকেন টার্মস বা ভাঙা শর্তাবলী

যদি আপনি নির্দিষ্ট মেয়াদের আগে আপনার ফিক্সড ডিপোজিট বা অন্য কোনো স্কিম ভাঙতে চান, তাহলে কিছু শর্তাবলী প্রযোজ্য হবে:

  1. সুদের হ্রাস: আপনার ডিপোজিটের সুদের হার কমে যাবে।
  2. প্রক্রিয়াকরণ চার্জ: ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত কেটে নেওয়া হতে পারে।
  3. সময় বিলম্ব: ডিপোজিটের অর্থ ফেরত পেতে ৫-৭ কর্মদিবস সময় লাগতে পারে।

উদাহরণ: যদি ১ বছরের জন্য ৯% হারে একটি ফিক্সড ডিপোজিট খুলেন এবং ৬ মাসের মাথায় এটি ভাঙেন, তাহলে আপনি কেবল ৩%-৪% সুদ পাবেন এবং অতিরিক্ত চার্জ কেটে নেওয়া হবে।

লোন পলিসি: বেসিব ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট থেকে লোন সুবিধা

বেসিব ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টের মাধ্যমে লোন নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এই লোন সুবিধা সাধারণত গ্রাহকদের অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপ সামলানোর জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।

লোনের বৈশিষ্ট্য:

  1. লোনের পরিমাণ: আপনার একাউন্টে থাকা ব্যালেন্সের ৮০%-৯০% পর্যন্ত।
  2. সুদের হার: ৯%-১২% (লোনের মেয়াদ অনুযায়ী)।
  3. মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৩ বছর।
  4. প্রক্রিয়াকরণ ফি: ১%-২% (লোনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে)।
  5. নমুনা আবেদন: আপনি সরাসরি শাখায় গিয়ে বা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:

  • সেভিংস একাউন্ট নম্বর।
  • আইডি প্রমাণ (জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট)।
  • পে-স্লিপ (যদি আপনি চাকরিজীবী হন)।

গোপন শর্তাবলী:

  1. ডিফল্ট ফি: সময়মতো লোন পরিশোধ না করলে ৫%-৭% পর্যন্ত অতিরিক্ত জরিমানা প্রযোজ্য।
  2. নামমাত্র চার্জ: প্রাথমিক শর্তাবলী গ্রহণ করার পর অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ আরোপ করা হতে পারে।
  3. লোন বাতিলের শর্ত: যদি নির্ধারিত মেয়াদের ৩ মাসের মধ্যে প্রথম কিস্তি পরিশোধ না করা হয়, তবে আপনার সেভিংস একাউন্ট থেকে অর্থ কেটে নেওয়া হবে।

বেসিব ব্যাংকের গোপন শর্তাবলী এবং অন্যান্য খরচ

১. মাসিক একাউন্ট মেইনটেন্যান্স চার্জ

  • সেভিংস একাউন্ট: ৫০ টাকা।
  • কারেন্ট একাউন্ট: ১০০ টাকা।
  • যদি নির্ধারিত ব্যালেন্স না থাকে, তবে অতিরিক্ত চার্জ কাটা হয়।

২. ডেবিট কার্ড ফি:

  • প্রথমবার ইস্যু করার জন্য ৫০০ টাকা।
  • বার্ষিক রিনিউয়াল ফি ৩০০ টাকা।

৩. চেকবই খরচ:

  • প্রথম ১০টি পাতা বিনামূল্যে।
  • অতিরিক্ত চেক প্রতি পাতা ১০ টাকা।

৪. মোবাইল ব্যাংকিং চার্জ:

  • প্রতি লেনদেনে ২-৫ টাকা কেটে নেওয়া হয়।
  • SMS নোটিফিকেশন ফি ২০ টাকা/মাস।

৫. অনলাইন ব্যাংকিং ফি:

  • প্রতি অনলাইন ট্রান্সফারের জন্য ১০-২০ টাকা।

কিছু সতর্কতা এবং পরামর্শ

  1. চুক্তি ভালো করে পড়ুন: একাউন্ট খোলার সময় শর্তাবলী মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
  2. ডকুমেন্ট ঠিকমতো দিন: ভুল তথ্য দিলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।
  3. মিনিমাম ব্যালেন্স বজায় রাখুন: সেভিংস একাউন্টে কমপক্ষে ৫০০০ টাকা রাখুন, না হলে মাসিক চার্জ আরোপ করা হবে।
  4. ফি সম্পর্কে জেনে নিন: ব্যাংক ফি এবং চার্জ সম্পর্কে ভালো করে জানুন।

ইসলামী একাউন্টের বিশেষ বৈশিষ্ট্য

বেসিব ব্যাংকের ইসলামী একাউন্টের মাধ্যমে আপনি শরিয়াহ-সম্মত উপায়ে আপনার আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করতে পারবেন। এই ধরনের একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন:

১. সুদবিহীন লেনদেন (Interest-Free Banking):

  • ইসলামী একাউন্টের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সুদের কোন লেনদেন হয় না।
  • মুনাফা শরিয়াহর নিয়ম অনুযায়ী লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

২. লভ্যাংশভিত্তিক মুনাফা:

  • ইসলামী সেভিংস একাউন্টে আপনাকে লভ্যাংশ (Profit Share) প্রদান করা হয়।
  • ব্যাংক আপনার সঞ্চয়ের অর্থ ব্যবহার করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এবং সেই লাভ থেকে একটি অংশ আপনাকে দেয়।
  • মুনাফার হার: ৪%-৫% (ব্যবসার লাভের উপর নির্ভরশীল)।

৩. কারেন্ট একাউন্ট (Islamic Current Account):

  • লেনদেনের সুবিধা থাকলেও কোনো মুনাফা বা সুদ প্রদান করা হয় না।
  • বিনিময়ে ব্যাংক একটি ফি চার্জ করতে পারে।

৪. প্রজেক্ট-ভিত্তিক বিনিয়োগ:

  • ব্যাংক আপনার অর্থকে হালাল ব্যবসা বা প্রজেক্টে বিনিয়োগ করে।
  • যেমন: কৃষি, হালাল পণ্য উৎপাদন, বা সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প।

ইসলামী একাউন্টের সুবিধা ও শর্তাবলী

১. হালাল বিনিয়োগ:

  • ব্যাংক কোনো হারাম বা অবৈধ ব্যবসায় বিনিয়োগ করে না।
  • শুধুমাত্র ইসলামিক ফাইন্যান্স নীতিমালা অনুযায়ী বিনিয়োগ করা হয়।

২. ফি ও চার্জ:

  • মাসিক একাউন্ট মেইনটেন্যান্স চার্জ সর্বনিম্ন রাখা হয়।
  • কোনো সুদ প্রদান বা গ্রহণ হয় না।

৩. মুদারাবা চুক্তি:

  • ইসলামী সেভিংস একাউন্টের ভিত্তি হলো মুদারাবা চুক্তি, যেখানে গ্রাহক (সঞ্চয়কারী) এবং ব্যাংক পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে লাভ ভাগাভাগি করে।

৪. তাওক্কুল এবং আমানত:

  • ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমে আমানতের অর্থ হালাল এবং নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করা হয়।
  • সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া নির্ভরযোগ্য এবং শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা নিরীক্ষিত।

ইসলামী ফিক্সড ডিপোজিট বা মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট

১. মুনাফার হার:

  • মুদারাবা ফিক্সড ডিপোজিটে লাভ ৫.৫% থেকে ৭% পর্যন্ত হতে পারে।
  • এটি নির্ভর করে ব্যাংকের বিনিয়োগ প্রকল্পের লাভের উপর।

২. মেয়াদ:

  • ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর বা ৫ বছর।
  • মুনাফার হার মেয়াদের উপর নির্ভরশীল।

৩. ভাঙা শর্তাবলী:

  • নির্দিষ্ট মেয়াদের আগে ভাঙলে মুনাফার হার কমে যেতে পারে।
  • কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াকরণ ফি আরোপ করা হয়।

৪. অতিরিক্ত গোপন শর্ত:

  • মেয়াদের আগেই ডিপোজিট ভাঙলে আপনার আসল অর্থ ফেরত দেওয়া হবে, তবে লভ্যাংশ কমে যেতে পারে।

ইসলামী একাউন্ট থেকে লোন সুবিধা (কর্জ হাসানা)

ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমে কর্জ হাসানা নামক সুদবিহীন ঋণ প্রদান করা হয়। এটি মূলত আর্থিক চাপে থাকা গ্রাহকদের সহায়তা করার জন্য।

লোনের বৈশিষ্ট্য:

  1. সুদের হার: সুদ প্রযোজ্য নয়।
  2. সার্ভিস চার্জ: শুধুমাত্র প্রক্রিয়াকরণের খরচ নেওয়া হয়।
  3. মেয়াদ: ১-৫ বছর পর্যন্ত।
  4. নির্ধারিত খাত: শুধুমাত্র হালাল উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য।

লোন পেতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:

  • সেভিংস একাউন্ট নম্বর।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • প্রয়োজন অনুযায়ী আয় প্রমাণপত্র।

ইসলামী ব্যাংকিংয়ের গোপন শর্তাবলী এবং সতর্কতা

  1. ফি সম্পর্কে সচেতন থাকুন:
    • অনলাইনে লেনদেন, SMS নোটিফিকেশন, এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহারের জন্য আলাদা ফি প্রযোজ্য।
  2. মুনাফার হার পরিবর্তনশীল:
    • ব্যাংকের ব্যবসার লাভ-ক্ষতির উপর নির্ভর করে মুনাফার হার পরিবর্তিত হতে পারে।
  3. শর্ত পূরণ না হলে জরিমানা:
    • নির্ধারিত মেয়াদের আগে টাকা তুললে লভ্যাংশ কমতে পারে।

আরও জানুনঃ

FAQ

১. Basic Bank Account খুলতে কত টাকা লাগে?

সাধারণত ৫০০-১০০০ টাকা প্রথম জমা হিসেবে প্রয়োজন হয়।

২. বেসিব ব্যাংকে কি অনলাইন একাউন্ট খোলা যায়?

হ্যাঁ, অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। তবে শাখায় গিয়ে কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

৩. একাউন্ট খুলতে কতদিন সময় লাগে?

সাধারণত ১-২ কর্মদিবসের মধ্যেই একাউন্ট চালু হয়ে যায়।

৪. ইসলামী ব্যাংকিংয়ে সুদ কীভাবে এড়ানো হয়?

ইসলামী ব্যাংকিংয়ে সুদ (রিবা) গ্রহণ ও প্রদানের পরিবর্তে মুদারাবা, মুশারাকা, বা ইজারা পদ্ধতিতে লভ্যাংশ ভাগাভাগি করা হয়।

1 thought on “কিভাবে বেসিব ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হবে | How to Open Basic Bank Account”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *